









নিজস্ব প্রতিবেদন:-জীবনে সাফল্য পেতে গেলে অনেক ধরনের বাধার সম্মুখীন আপনাকে হতে হবে ।এবং সে বাধা গুলি পেরিয়ে যেতে পারলেই মিলবে আলোর হদিশ । ঘটনা কোন রূপকথা বা গল্প নয় । বাস্তবে এর প্রমাণ রয়েছে অনেক । আমাদের আশেপাশে এমন বহু মানুষ রয়েছে যারা টাকা পয়সার অভাবে পড়াশোনা করতে পারেন না । বা খুব কষ্ট করে নিজের পড়াশোনা টা চালায় । পড়াশোনার ইচ্ছেশক্তির জন্যই তারা প্রতিনিয়ত সমস্ত রকম বাধা বিপত্তিকে তোয়াক্কা করে এগিয়ে যাচ্ছে লক্ষ্যপূরণ উদ্দেশ্যে ।ঠিক তেমনি একজন মানুষ হলেন রাজেন্দ্র বাবু । যিনি উঠে এসেছেন মহারাষ্ট্রের একটি আদিবাসী সম্প্রদায়ের পরিবার থেকে ।





রাজেন্দ্রপুর পড়াশোনায় খুব ভাল ছিলেন ছোটবেলা থেকে । কিন্তু সংসারে অভাব তাকে বাধা দিচ্ছিল বারবার । তার মা যখন গর্ভবতী ছিলেন তখন তার বাবা মারা যান । তাই বাবার অনুভূতি কোনোদিন অনুভব করতে পারেননি তিনি । তার কাছে বাবা এবং মা সেই একজন । কিন্তু সংসার চলবে কিভাবে এই চিন্তা ভাবনা প্রতিনিয়ত মুহূর্ত তার মায়ের মনে ।





সেই অর্থে মহারাষ্ট্রে আদিবাসী সম্প্রদায়ের এলাকাতে প্রচুর পরিমাণে মহুয়া ফুল হত ।সেই মহুয়া ফুল থেকে পানীয় তৈরি করা হতো । কিন্তু এটি কোন বেআইনি কাজ ছিলনা ।তাই সেই কাজের সাথে যুক্ত হয়ে যায় রাজেন্দ্র বাবুর মা। তারপর মদ বিক্রি করে দিনে ১০০ টাকা উপার্জন করতেন তারা । সে টাকাতেই চলছে তাদের সংসার ।





রাজেন্দ্র বাবু দশম শ্রেণির পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর পান। এর ফলে তিনি স্কলারশিপে মুম্বাইয়ের জি এস মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। ছোটোবেলা থেকে তার ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন থাকলেও তিনি ভেবেছিলেন এমন কিছু করবেন যাতে মানুষের পাশে থাকা যায়। এরপরই তিনি ইউপিএসসি পরীক্ষার জন্য দিন রাত পড়াশোনা শুরু করেন।





সবকিছু ভুলে গিয়ে যন্ত্রের মতন পড়তে লাগলেন। অবশেষে ২০১২ সালে ফরিদাবাদে আইআরএস অফিসার নিযুক্ত হন তিনি।রাজেন্দ্র ১৫০ কিমি দূরে সিবিএসসি বোর্ডের স্কুলে ভর্তি হন। সেই স্কুল ছিল তাদের বাড়ি থেকে ১৫০ কিমি দূরে। সেই স্কুলে দূর থেকে আসা ছাত্রদের জন্য রুমের ব্যবস্থা ছিল। সেখানেই অবশেষে থাকার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।





রাজেন্দ্রপুর চাকরি পাওয়ার পর ইউপিএসসি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেন এবং ২০১৭ সালে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মুখ উজ্জ্বল করে আইএএস অফিসার হন ।২০১৭ সালে তিনি চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার হিসেবে নিযুক্ত হন শোলাপুরে। ২০১৮ সালে নন্দূর্বার জেলার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নিযুক্ত হন। তারপর থেকে আদিবাসী সম্প্রদায়ের জন্য একাধিক উন্নয়নমূলক কাজ তিনি করেন । এবং তার সাথে সাথে করোনা আবহে ৪০ হাজার পরিবারকে রেশন ব্যবস্থা করে দেন তিনি ।এমনকি বিনামূল্যে উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা করে দেন তিনি । তাইতো আজও ভারতের প্রতিটি মানুষের কাছে আদর্শের এক মাইলফলক।














